জবান সংযত রাখা সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনা কি? চলুন জেনে নিই

জবান সংযত রাখা সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনা কি? চলুন জেনে নিই


মানুষ সমাজে বসবাসকারী। সমাজে বসবাস করার কারণে একে অন্যের সাথে নানান কাজ কর্ম করতে হয়। তাছাড়া সত্য মিথ্যার ব্যাপারতো আছোই। এমন সব ক্ষেত্রে আমাদের জবান ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা: । আমরা আজকের আমাদের জবান ব্যবহারের ব্যাপারে কিছু হাদিস পড়বো।


জবান সংযত রাখা সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনা কি? চলুন জেনে নিই




হাদিস-০১


হযরত আনাছ ইবনে মালেক রা: হতে বর্ণিত আচে, রাসুল সা: বলেন- বান্দার ইমান ঠিক হয় না যতক্ষণ পর্যন্ত তার জবান ঠিন না হয়। মুমিন ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে না, যতক্ষণ তার প্রতিবেশীগণ তার জবান অন্যের গীবত সেকায়াত থেকে বিরত না হয়।


আলোচ্য হাদিসে এ কথা স্পষ্ট করে বলা হলো যে, যে ব্যক্তির জবান দ্বারা অন্যের ক্ষতি তথা গিবত সেকায়াত করা হয়, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। অর্থ্যাৎ মুমিন বান্দার জন্য তার জবান সংযত রাখা খুবই জরুরি ব্যাপার। তাই আমরা আমাদের জবানকে সংযত রাখতে হবে। অন্যের গীবত সেকায়াত থেকে বিরত থাকতে হবে।


হাদিস -০২


মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা: বলেছেন- বনী ইসরাইলের নবীগণই রাজত্ব এবং শাসনকার্য্য পরিচলনা করতেন। এক নবীর মৃত্যুর পর অপর এক নবীর আগমন হতো। তোমরা জেনে রাখো, আমার পর আর কোনো নবী রাসূল আসবে না। অবশ্যই খলিফাগণের আবির্ভাব ঘটবে এবং তাদের সংখ্যা হবে অনেক। (তাবারানী।)



হাদিস -০৩


নবী করিম সা: বলেছেন- দুনিয়া মুমিন ব্যক্তির জন্য জেলখানাস্বরূপ, কবর তার দূর্গ এবং জান্নাত তার বাসভবন। আর দুনিয়া  কাফেরদের জন্য জান্নাত, করব কয়েদখানস্বরূপ এবং জাহান্নাম তার বাসস্থান।


অত্র হাদিসের দ্বারা আমরা এটা বুঝতে পারি যে, দুনিয়ায় মুমিন জীবন সুখকর হবে না। সাধারণত কাফেরদের জন্য এটিই সুখকর । তারা যা খুশি করতে পারে, কিন্তু কোনো মুমিন তা পারেন না। মুমিনগণ আল্লাহর বিধান মানা সাপেক্ষে এখানে জীবন যাপন করতে হবে। আল্লাহ ভয় অন্তরে রেখে, সকল কাজ কর্ম করতে হবে।



হাদিস -০৪ 


রাসুল পাক সা: হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন- যখন কোনা ব্যক্তি বলে - লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, তখন তার মুখ থেকে সবুজ পাখীর ন্যায় একজন ফেরেশতা বের হয়, যার ইয়াকুত এবং মতির দ্বারা সুসজ্জিত ডানা দুটির এটি মাশরেকে এবং অপরটি মাগরেবে। যখন সে ডানা দুটি খোলে তখন মাশরেক থেকে মাগরেব পর্যন্ত ভরিয়া যায়। তারপর উক্ত ফেরেশতা মৌমাছির ন্যায় গুণগুণ আওয়াজে আসমানে উঠে আরশে আজিমে পৌঁছে যায়। আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ ঐ ফেরেশতাকে বলে আল্লাহর ইজ্জত ও মহত্ত্বের কসম, তুমি এখানে অবস্থান করো। সে বলে- আমি অবস্থান করবো না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা ঐ বান্দাকে ক্ষমা না করবেন। অতপর আল্লাহ তায়ালা উক্ত ফেরেশতাকে 70 হাজার জবান দান করেন আর সে উক্ত জবান সমূহ দ্বার কালেমা পাঠকারীর জন্য কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। অতপর  কেয়ামত দিবস যখন আসবে উক্ত ফেরেশতা ঐ কালেমা পাঠকারীর হাত ধরে পুলসেরাত পার করাইয়া জান্নাতে পৌঁছে দিবেন। (দুররাতুন নাছিহীন)



উক্ত হাদিসের দ্বারা আমরা এই শিক্ষা নিতে পারি যে, আমাদের জবান আল্রাহর নামে, তার রাসুল সা: এর দুরুদ ও শানে ব্যবহার করা উচিৎ। এতে করে আমাদের উভয় জাহানের কল্যাণ হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে আমরা যদি আমাদের জবান ব্যবহারে সতর্ক না হলে আমাদের আমল বরবাদ হতে পারে। সুতরাং আল্লাহর দেয়া বড় নেয়ামত আমাদের এই জবান যেনো কোণোভাবেই অপরের গীবত সেকায়াতে লিপ্ত না হয় বরং আমাদে জবান সদা আল্লাহর জিকির ও নবী পাকের উপর দুরুদে মশগুল থাকে।


আল্লাহ আমাদের তাউফিক দান করুন।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url