ইসলামিক পরিভাষা বাইয়াত || বাইয়াত কাকে বলে? প্রকারভেদ

ইসলামিক পরিভাষা বাইয়াত || বাইয়াত কাকে বলে? প্রকারভেদসহ আলোচনা


 ইসলামিক বিভিন্ন পরিভাষা জানা আমাদের জন্য খুবই জরুরি একটি ব্যাপার। ইসলামি বিভিন্ন পরিভাষার মধ্যে বাইয়াত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা।  আজকে আমরা বাইয়াত সম্পর্কে জেনে নিবো।

চলুন তবে শুরু করি---

আল মুজামুল ওয়াফী গন্থের আলোকে- বাইয়াত (আরবি- بَيْعٌة) শব্দটি একটি ইসলামিক পরিভাষা। এর অর্থ আনুগত্যের চুক্তি, আনুগত্যের শপথ ও আনুষ্ঠানিক আনুগত্য 

এর মূলধাতু হলো (بيع) যার অর্থ বিক্রয় করা, লেনদেন করা, শপথ করা, চুক্তি করা ইত্যাদী।

তবে, ইসলাম ধর্মে বাইয়াত বলতে শপথ পাঠ বা আনুগত্যের চুক্তিকে বুঝানো হয়। 

ইসলামিক পরিভাষা বাইয়াত  বাইয়াত কাকে বলে প্রকারভেদ


কুরআনের পরিভাষায়:

পবিত্র কোরানের বিভিন্ন আয়াতে কারিমায় এই শব্দটি ব্যবহার রয়েছে। যেমন -

সুরা নুরের ৩৭ নং আয়াত, 

অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী

এমন লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচাকেনা আল্লাহর স্মরণ, নামায কায়েম ও যাকাত আদায় থেকে গাফেল করতে পারে না। ৩৫ তারা ভয় করে সেই দিনকে, যে দিন অন্তর ও দৃষ্টি ওলট-পালট হয়ে যাবে।

সুরা জুমআর ৯ নং আয়াত, يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِىَ لِلصَّلٰوةِ مِنۡ يَّوۡمِ الۡجُمُعَةِ فَاسۡعَوۡا اِلٰى ذِكۡرِ اللّٰهِ وَذَرُوا الۡبَيۡعَ​ ؕ ذٰ لِكُمۡ خَيۡرٌ لَّـكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ‏ ٩ 

হে মু’মিনগণ! জুমু‘আহর দিনে যখন নামাযের জন্য ডাকা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে শীঘ্র ধাবিত হও, ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য অতি উত্তম, যদি তোমরা জানতে!

সুরা তওবার ১১১ নং আয়াতে এর ব্যবহার দেখতে পাবেন। 


প্রকারভেদ:


ইসলামী বিশেষজ্ঞরা বাইয়াতকে মোটামুটি ৫ ভাগে বিভক্ত করেছেন। 


১. খিলাফাতের বাইয়াত - যা ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানের বা খলিফার আনুগত্বের শপথ হিসেবে নেয়া হয়ে থাকে। যখন ইসলামী রাষ্ট্রের খলিফা নিয়োগ করা হয় তখন এই বাইয়াত গ্রহণ করা হয় ৷


২. বাইয়াতে ইসলাম - তথা ইসলাম গ্রহণের জন্য বাইয়াত শপথ নেয়া।


৩. বাইয়াতে তাসাওউফ - তাকওয়া পরহেযগারীতে অগ্রগামী হবার এবং নিজের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার শপথ। সাধারণত কোন পীর বা ধর্মীয় ব্যক্তির পক্ষ থেকে এই বাইয়াত নেওয়া হয়ে থাকে ৷


৪. বাইয়াতে হিজরত - দারুল কুফর বা কাফেরদের জুলুমী রাষ্ট্র ছেড়ে কোন ইসলামী রাষ্ট্রে চলে যাওয়ার জন্য কারো হাতে হাত রেখে যে শপথ গ্রহণ করা হয়।


৫. বাইয়াতে জিহাদ - জিহাদের ময়দানে দৃঢ় থাকার বাইয়াত। যদি কখনো জিহাদের ময়দানে ভয়ে পালিয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দেয়, তখন আমীরে জিহাদের হাতে সকল মুজাহিদ বাহিনী দৃঢ়তার বাইয়াত গ্রহণ করে। 

এছাড়াও সাধারণ অবস্থাতেও আমীরে জিহাদের হাতে মুজাহিদ বাহিনী জিহাদের বাইয়াত গ্রহণ করে থাকে ৷


এখানে উল্লেখ্য যে, বাইয়াতের এসব প্রকারভেদ ছাড়াও আরো প্রকারভেদ রয়েছে ৷ 

এসবের বিস্তারিত বিবরণ ফিকহের কিতাবসমূহে রয়েছে ৷ 

উপরোক্ত প্রকারভেদের সামর্থনে ইসলামের মূল গ্রন্থ কুরআনে পর্যাপ্ত আয়াত রয়েছে ৷ 

যার সবগুলো এখানে এখনো উল্লেখ করা হয়নি।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url