পরহেজগার হবার উপায়গুলো কি কি? বিজ্ঞবানী

পরহেজগার হবার উপায়গুলো কি কি? বিজ্ঞবানী

আমরা প্রতিনিয়ত ইসলামের বিধান মোতাবেক আমলী জিন্দেগী গড়ে তোলা দরকার। আর আমলী জিন্দেগীতে পরহেজগারিতা খুবই দরকারি একটি বিষয়। পরহেজগারিতা হলো- আল্লাহর ভয়ে মন্দ কাজ হতে বিরত থাকা। এটি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অতীব গুরুত্বের দাবি রাখে। বলা হয়ে থাকে পরহেজগারিতা ছাড়া আমল গ্রহণ হয় না। তাই আমাদের উচিৎ সর্বপ্রকার পরহেজগারিতা অবলম্বন করা। আমরা আজকে পরহেজগার হবার উপায়গুলো আলোচনা করবো।


পরহেজগার হবার উপায়গুলো কি কি? বিজ্ঞবানী


পরহেজগার হবার উপায়:

10 টি কাজ দ্বারা মানুষ পূর্ণ পরহেজগার হতে পারে যথা:-

  1. পরনিন্দা হতে জবান সংযত রাখা।
  2. সন্দেহমূলক বিষয় হতে বিরত থাকা।
  3. ঠাট্রা, তামাশা  না করা।
  4. হারাম হতে চোখ ফিরাইয়া রাখা।
  5. সদা সত্য কথা বলা।
  6. আল্লাহ তায়ালার শোকর করা ও নিজেদের নফসকে ভাল মনে না করা।
  7. টাকা পয়সা অপাত্রে খরচ না করে, হকদারদের জন্য খরচ করা।
  8. নিজেকে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন বা বড় পরহেজগার মনে না করা।
  9. রুকু সেজদা ভালভাবে করত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করা।
  10. নবীজির সুন্নাতসমূহ অনুসরণ করা ও মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রাখা।


হাদিসে রাসূল (সা:) এ এসেছে- হযরত আনাছ রা: হতে বর্ণিত আছে, নবী পাক (সা:) বলেছেন- যে ব্যক্তি আমার তরিকাকে মুহাব্বত করে, সে যেন আমাকেই মুহাব্বত করল। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহাব্বত করল, সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।


পরহেজগারিতার হেকায়াত:


বর্ণিত আছে যে, হযরত ছামুন র: শেষ বয়সে একটি মহিলাকে বিবাহ করেন এবং তার গর্ভে একটি কন্য সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। যখন মেয়েটির বয়স তিন বছর হল তখন হযরত ছামুন র: এর অন্তরে তার প্রতি মুহাব্বত পয়দা হলো। তিনি একদা স্বপ্নে দেখলেন কেয়ামত কায়েম হয়েছে এবং প্রত্যেক নবী ও ওলীর ঝান্ডা দাড় করানো হয়েছে আর তাহাদের পিছনে উচু একটি ঝান্ডা, যার নূর এক পার্শ্বকে সম্পূর্ণ ঘেরাও করে নিয়েছে। হযরত ছামুন র: উক্ত ঝান্ডা সম্পর্কে জিজ্ঞাস করায় লোকেরা বলল- ইহা আল্লাহর খালেছ পরহেজগার ব্যক্তিদের ঝান্ডা।

অতপর হযরত ছামুন র: নিজেকে উহাদের মদ্যে সামেল দেখতে পাইলেন কিন্তু হঠাত একজন ফেরেশতা এসে তাকে সকলের মধ্য থেকে বাহির করে দিলেন। ছামুন রা: বললেন আমিতো আল্লাকে মুহাব্বত করি আর ইহা হলো- আল্লাহকে মুহাব্বতকারীদের ঝান্ডা, অথচ তুমি আমাকে এখান থেকে বের করে দিচ্ছো।

ফেরেশতা উত্তরে বলল- সত্যই তুমি আল্লাহর মুহাব্বতকারীগণের মধ্যে ছিলে কিন্তু এখন তোমর অন্তরে সন্তানের মুহাব্বত এসে গেছে, এ জন্য তোমার নাম আল্লাহর মুহাব্বতকারীদের তালিকা হতে কেটে দেওযা হয়েছে।

এটি শুনে হযরত ছামুন র: ঘমের মধ্যে খুব ক্রন্দন করলেন এবং বললেন- হে আল্লাহ, সন্তান যদি তোমার মুহাব্বতের প্রতিবন্ধকতা হয় তবে তাকে আমার নিকট থেকে দূর কর, যাতে করে আমি  তোমার রহমত ও মেহেরবানীর নিকটবর্তী হতে পারি। এর পর একটি আওয়াজ শুনলেন, কে যেন বলতেছে অবেলা ছামুন র: ঘুম থেকে জেগে উঠলেন েএবং জিজ্ঞাস করলেন- এটি কিসের শব্দ? লোকেরা বলল- তোমার মেয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে। তখন ছামুন র: শোকর আদায় করলেন এবং বললেন- সমস্ত প্রশংসা ঐ সত্ত্বার  ‍যিনি আমার নিকট থেকে মুহাব্বতের প্রতিবন্ধকতা দূর করে দিয়েছেন।

-- (মেশকাতুল আনওয়ার)


শেষকথা:

উক্ত হাদিস ও হেকায়াত থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য পরহেজগারিতা ও আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (সা:) এর প্রতি মুহাব্বত কতটা প্রয়োজনীয়। তাই আমাদের উচিৎ প্রত্যেক কাজে আল্লাহর বিধান মোতাবেক, রাসূল সা; এর সুন্নাতের অনুসরণ করত: আঞ্চাম দেয়া।  আর প্রত্যেকের জন্য পরহেজগারিতা অবলম্বন করা জরুরি। তাতে করে আমরা আমাদের কৃত  ইবাদাত কবুল হবার যোগ্য করে তুলতে পারি। আমরা আমাদের জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে সফলতা অর্জন করতে পারি।

প্রিয় পাঠক, আশা করি আপনারা আমাদের পোস্টকৃত লেখাগুলো নিয়মিত পড়ছেন এবং উপকৃত হচ্ছেন। দেখা হবে  পরবর্তী পোস্টে। আল্লাহ হাফিজ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url