How are the people of Bangladesh Muslim?- বাংলাদেশের মানুষ মুসলিম হলো যেভাবে
How are the people of Bangladesh Muslim?- বাংলাদেশের মানুষ মুসলিম হলো যেভাবে
বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার করেন ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন খিলজী। এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত থাকলেও প্রকৃত তথ্য প্রমাণ করে যে, বিল খিলজীর আগমনের অনেক আগেই এদেশে ইসলাম প্রচারিত হয়। এদেশে মুসলাম বা ইসলামের অনুসারী তৈরি হয়। ইতিহাসমতে ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন খিলজীর বাংলা বিজয়েরও প্রায় ৬০০ বছর আগেই সাহাবায়ে কেরামগণ (রা:) দ্বারা বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের প্রচার ঘটে। এখানে মুসলমান সমাজ তৈরি হয়। ফলে, মোহাম্মদ বিন খিলজীর আগমনের আগেই যে এখানে ইসলাম ধর্ম প্রচলিত ছিল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
উপরোক্ত আলোচনাটি মূলত লিখিত ইতিহাসের অধ্যায়। আমরা আজকে সাধারণত এদেশের মুসলমানদের অলিখিত ইতিহাসের একটি অধ্যায় আলোকপাত করতে যাচ্ছি। আশা করি এতে করে আপনাদের অনেক উপকার হবে।
বাংলা অঞ্চলে মুসলমান-Muslim হলো যেভাবে:
আমাদের মাঝে একটি ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে, বাংলাদেশ ভারতীয় উপমহাদেশের অংশ। এটি পুরোপুরি সত্য নয়। আজকে আমাদের আলো্য বিষয় সেটি নয় তাই এ বিষযে অন্য একটি আলাদা পোস্ট করবো। আজকে আমরা আলোচনা করছি - বাংলা অঞ্চলে মুসলমান হলো যেভাবে, তা নিয়ে।
আমরা কয়েকটি বিষয় অধ্যয়ন করলেই আমাদের আলোচ্য বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে। আমরা আজকে মূলত 3 টি বিষয় নিয়ে কথা বলার বা আলোচনা করার প্রয়াস পাবো।
১। আরব্য মুজাহিদগণের মাধ্যমে:
এই মহাদেশের মুসলমানগণের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আলোচনা করলেই ব্যাপারটি বুঝা সহজ হয়ে যা। তাই প্রথমে আমরা বাংলা অঞ্চলের পশ্চিমাংশ তথা পাকিস্তান আফগানিস্তান অঞ্চলের মুসলমানদের ধর্মিয়বিশ্বাস ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এর সারাংশ যদি দেখি- সেখানে দেখতে পাবো যে, এই অঞ্চলের মুসলামানগণ সাধারণত যুদ্ধা মনোভাবের। তারা যুদ্ধকে তথা জিহাদকে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করে, বিশ্বাস করে যে, একমাত্র জিহাদ বা যুদ্ধই মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয়। যা গৌবরের ও সম্মানের। তাই তারাও যুদ্ধ-জিহাদী মনোভাবাপন্ন হয়ে থাকেন।
আমরা যদি এর কারণ বিচার করতে চাই তবে সর্বপ্রথম আমরা দেখবো যে, তারা মূলত মুসলমান তথা ইসলামের ছায়াতলে এসেছেন, কোনো না কোনো যুদ্ধাদের হাত ধরে। তদানিন্তনকালে আরবের বিভিন্ন অঞ্চল হতে এই উপমহাদেশে মুসলীম যুদ্ধাগণ ইসলামের দাওয়াত নিয়ে, জিহাদের সুমহান আদর্শে বলীয়ান হয়ে আসেন। তারা মূলত পাকিস্তানের খাইবার গিরিপথ দিয়ে এ অঞ্চলে প্রবেশ করেন এবং দ্বীন প্রচার শুরু করেন। আর এটি তো সত্য যে, তারা যেহেতু যুদ্ধা ছিলেন, তাদের মূল আদর্শ বা ক্রিয়া কলাপ যুদ্ধ কেন্দ্রিকই ছিল। তাই বর্তমান সময়েও আমরা ঐ অঞ্চলের মুসলমানদের মাঝে এই জিহাদী ভাব বা আদর্শ বেশি দেখতে পাই। তারা তাতে গৌরববোধ করেন।
২। আরব্য বণিকদের মাধ্যমে:
আদীকাল থেকেই আরব্য বণিকগণ তৎকালিন শ্রীলং বর্তমান শ্রীলংকায় ব্যবসা বানিজ্য করে বেড়াতেন। তারা নৌপথে বানিজ্য করতেন। আরব থেকে মুসলিম বনিকগণ শ্রীলংকায় বানিজ্যের উদ্দেশ্যে যাতায়াতের সময় যাত্রা বিরতির জন্য তৎকালিন বাংলা অঞ্চলের ইসলামাবাদ বর্তমান চট্রগ্রাম বন্দরে তাদের বানিজ্যিক নৌযানগুলো নোঙ্গর করে বিশ্রাম নিতেন। খাদ্য পানি সাথে সাথে এখান থেকে মসলা জাতীয় পণ্য ক্রয় করে নিতেন।
এই সময়ই তারা বর্তমান চট্রগ্রামে অবস্থানকালে তাদের আবহমান কালের অভ্যাসগতভাবেই তারা এখানকার মেয়েদের বিয়ে করতেন। কথিত আছে- বিয়ের সময় তারা তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে করতেন। ফলে, তারা েএই হিন্দু তথা সনাতনী মেয়েদের কালিমা পড়িয়ে মুসলমান বানিয়ে নিতেন। গাড়ি-বাড়ি টাকা পয়সার অভাব না থাকায়, এখানকার মেয়েরাও তাদের বিয়ে করে নিতেন। ফলে, বিয়ের মাধ্যমে েএকটি মেয়ে ও পরবর্তীতে তাদের ঘরে আসা সন্তানাদিও মুসলিম হিসাবেই পরিচিত হন।
আমরা যদি লক্ষ্য করি- তবে এটি স্পষ্টতই দেখতে পাবো যে, আমাদের ঐ অঞ্চলের মুসলমানগণ সাধারণত ব্যবসায়ি মনোভাবাপন্ন হয়ে থাকেন। এতে করে আমাদের এই যুক্তিতেও আমরা আমাদের আলোচনার সত্যতা মেনে নিতে পারি।
৩। পীর ফকিরগণের মাধ্যমে:
যেহেতু রাসুল (সা:) এর পরবর্তী সময় হতেই এখানে কয়েকজন সাহাবী (রা:) এর আগমনের ইতিহাস পাওয়া যায়, তাই আমরা এটি মেনেই নিতে পারি যে, এখানে ইসলাম ধর্মের বানী প্রচারের ধারাবাহিকতা ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের এখানে আরব থেকে বিশেষকরে তৎকালিম শাম দেশে থেকে সূফীবাদী তথা পীর ফকিরগনের আগমন ঘটে। তারা মূলত বর্তমান ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল দিয়ে এই সিন্দু এলাকায় আগমন করেন। তাঁদের আগমন ও দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে, তালিম তরবিয়াতের দ্বারা বহু মানুষ মুসলমান হয়। তাই আমরা তাদের আগমনীদ্বারে সাধারণত বেশিরভাগ মুসলমানকে সূফীবাদী দর্শনের অনুসরী দেখতে পাই।
বর্তমান ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মুসলমানদের বেশিরভাগই পীর ফকিরের দর্শনের প্রভাবিত। তারা সূফীবাদের চর্চাকে দ্বীনের চর্চা বিশ্বাস করেন এবং সেমতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী পরিচালনা করে থাকেন। ফলে আমরা তাদের বর্তমান ধর্মীয় বিশ্বাস আর কার্জকলাপ দ্বারা বুঝতে পারি যে, তারা মূলত এদেশে আগত পীর ফকিরগণের মাধ্যমেই মুসলমান হয়েছে। আর সময়ের ব্যবধানে, বংশ পরম্পরায় তাদের উত্তরাধিকারগণ এই চর্চার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন।
শেষকথা:
আমরা আজকের আলোচনার সারাংশে এ কথা বিশ্বাস করতে পারি যে, এ অঞ্চলে রাসুল (সা:) এর সাহাবী (রা:) থেকেই ইসলামের দাওয়াতি কাজ শুরু হয়েছে। যদিও প্রচলিত আছে যে, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন খিলজীর আগমন দ্বারাই এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার লাভ করে। এই ঘটনাটি আংশিক সত্য। তবে ইতিহাস ও বাস্তবতার আলোকে আমরা বলতেই পারি যে, এখানে সাহাবায়ে কেরামগণের দ্বারাই প্রথম দ্বীনের দাওয়াত আসে। হয়তো প্রসার লাভ করে, আরও কয়েক শত বছর পর। মুহাম্মদ বিন খিলজীর আগমন, তার পরবর্তী আরব্য যুদ্ধা, বণিক, পীর মাশায়েখগনের হাত ধরেই এদেশের মানুষ ইসলাম দীক্ষা পায়। মুসলমান হয়।
আমাদের আলোচনাটি অতি সংক্ষিপ্ত করার উদ্দেশ্যে আমরা বেশি যক্তি তর্ক, দালিলক প্রমাণাদি উপস্থান করি নাই।
আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে আমাদের আজকের এই আলোচনাটি। আপনাদের কোনো বিষয়ে পরামর্শ ও মন্তব্য থাকলে কমেন্টে বলুন।
